স্ট্রোক একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা যা হঠাৎ করে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ঘটে। এটি মূলত দুই ধরনের হতে পারে:
ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং
হেমোরেজিক স্ট্রোক
ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটে যখন একটি রক্তনালী ব্লক হয়ে যায় এবং হেমোরেজিক স্ট্রোক ঘটে যখন একটি রক্তনালী ফেটে যায়।
স্ট্রোকের কারণ
স্ট্রোকের সাধারণ কারণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
- উচ্চ রক্তচাপ: নিয়ন্ত্রিত না থাকলে রক্তনালী ক্ষতি করতে পারে।
- ধূমপান: ধূমপান রক্তনালী সংকীর্ণ করে এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়।
- ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
- উচ্চ কোলেস্টেরল: কোলেস্টেরল রক্তনালীগুলোতে জমা হয়ে স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাদ্য স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্ট্রোকের লক্ষণ
স্ট্রোকের লক্ষণগুলো দ্রুত চিনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
- মুখে বাকা ভাব: মুখের একপাশ বেঁকে যাওয়া বা অসাড়তা।
- হাত বা পায়ে দুর্বলতা: একটি হাত বা পা দুর্বল হয়ে পড়া।
- কথা বলতে অসুবিধা: কথা বলতে অসুবিধা বা ভাষা বুঝতে সমস্যা।
- দৃষ্টি ঝাপসা: একটি বা দুইটি চোখে দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া।
- হঠাৎ মাথাব্যথা: কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎ মাথাব্যথা।
স্ট্রোকের প্রতিরোধ
স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু কার্যকর পদ্ধতি:
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ এবং নিয়ন্ত্রণ।
- ধূমপান পরিহার: ধূমপান বন্ধ করা।
- সুষম খাদ্যাভ্যাস: স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম: দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ করা।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা।
স্ট্রোকের চিকিৎসা
স্ট্রোকের চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। স্ট্রোকের চিকিৎসার কিছু পদ্ধতি:
- থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি: রক্তনালী ব্লক সরাতে ওষুধ ব্যবহার।
- এনডারেক্টমি: রক্তনালী থেকে জমা কোলেস্টেরল অপসারণ।
- স্টেন্টিং: রক্তনালী প্রসারিত করতে স্টেন্ট বসানো।
- রিহ্যাবিলিটেশন: ফিজিওথেরাপি ও ওকুপেশনাল থেরাপির মাধ্যমে পুনর্বাসন।
স্ট্রোকের পুনর্বাসন
স্ট্রোকের পরে পুনর্বাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোগীদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে ফিরে আসতে সাহায্য করে। পুনর্বাসনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
- ফিজিওথেরাপি: শরীরের দুর্বল অংশ শক্তিশালী করা।
- ওকুপেশনাল থেরাপি: দৈনন্দিন কাজের দক্ষতা উন্নত করা।
- কথা থেরাপি: কথা বলার ক্ষমতা পুনরুদ্ধার।
স্ট্রোক একটি জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে সঠিক সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো এবং সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব।